কারাগারে ডাক্তার এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার আবেদন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:২৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫০ বার।

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে এ শুনানি হয়।

এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না এবং সমস্যাগুলো দিন দিন বাড়ছে। এজন্য কারাগারে ব্যক্তিগত চিকিৎসক এনে তার চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

মাসুদ আহমেদ আরও বলেন, হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার চিকিৎসার একটি আদেশ দিয়েছিলেন। এরপর তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষ না করেই তাকে আবার কারাগারে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ। এখানে ব্যক্তিগত চিকিৎসক এনে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হোক।

এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীর কাছে তার বক্তব্য জানতে চান আদালত। দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন হোসেন কাজল বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে জেল কোড অনুযায়ী আপনি আদেশ দিতে পারেন। এরপর বিচারক বলেন, হাইকোর্টের আদেশটি আদালতে দাখিল করেন। দেখে পরে আদেশ দেবো। এ সময় খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, জয়নুল আবেদীন, বোরহান উদ্দিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নিজের পক্ষে আংশিক শুনানি করেন বিএনপি নেতা সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ মামলার শুনানির জন্য আদালত বসে। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

এর আগে মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে কারাগারের দোতালা থেকে হুইল চেয়ারে আদালত কক্ষে আনা হয়। এরপর মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা নিয়ে নিজের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এ মামলার এজাহারে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। অর্থ আত্মসাতেরও কোনো অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। সব জায়গায় বলা হয়েছে- মওদুদ আহমদ অপিনিয়ন (মতামত) দিয়েছেন। আমি কোথাও কোনো অপিনিয়ন দেইনি। তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের ৮ কর্মকর্তা নাইকোর সঙ্গে চুক্তির জন্য মতামত দিয়েছেন। তাদের কাউকে সাক্ষী বা আসামি করা হয়নি। তিনি বলেন, দেশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখা ও পুর্বের সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য এই মতামত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য আমাকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। আদালতের সময় ও রাষ্ট্রীয় অর্থ নষ্ট করার জন্য এই মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। মামলার অভিযোগ থেকে নিজেকে অব্যাহতি চান তিনি। এদিন মামলার আরেক আসামি শহীদুল ইসলামের পক্ষে আংশিক শুনানি করেন তার আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। এরপর শুনানির জন্য আরও সময় চাইলে আদালত ২০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন।

এরপর দুপুর ২টার পর খালেদা জিয়াকে আবারও কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তার পক্ষে ছিলেন আবদুর রেজাক খান, জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।

কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম মামলাটি করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। খবর সমকাল অনলাইন