জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল: গার্ড অফ অনার প্রদান

বগুড়া আ’লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:২৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৫৯ বার।

প্রবীণ রাজনীতিবিদ বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিনকে নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে শেষ শয্যায় শায়িত করা হয়েছে। রোববার বাদ আসর বগুড়া সদর উপজেলার মানিকচক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে পাশের গ্রাম কদিমপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়। জানাজা নামাজে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ আশ-পাশের কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
এর আগে বাদ যোহর বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বীর এই যোদ্ধাকে পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। তার সম্মানে জানাজাস্থলে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।
প্রথম নামাজে জানাজায় জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আলম মাহমুদ স্বপন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, বগুড়ার দুই সাংসদ আব্দুল মান্নান, হাবিবর রহমান, বগুড়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন, বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ, পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতবৃন্দ অংশ নেন। 
এছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁনসহ ওই দলটির নেতা-কর্মী, বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোজাম্মেল হক লালু, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম নয়নসহ সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বর্ষীয়ান নেতা মমতাজ উদ্দিনের মরদেহ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে-পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ এবং জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
বগুড়ার প্রবীণ রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন শনিবার দিবাগত রাত ৩টার কিছু পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 
স্বজনরা জানান, পঁচাত্তর বছর বয়সী মমতাজ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতাসহ  বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। চেখের চিকিৎসার জন্য তিনি গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভারতে যান। এক সপ্তাহের চিকিৎসা শেষে গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরেন।
মমতাজ উদ্দিনের ভায়রা ভাই বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের অধ্যক্ষ আহসান হাবিব জানান, দেশে ফেরার পর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে তাকে বগুড়া ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে শজিমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। তার এরপর তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’ 
রোববার সকালে মমতাজ উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ শত শত সাধারণ মানুষ শহরের কাটনারপাড়া এলাকায় তার বাসভবনে ভিড় করেন। পরে তার মরদেহ বগুড়া প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। সেখানে বগুড়া প্রেসক্লাব এবং বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে তার মরদেহ শহরের টেম্পল রোডে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।