পরিচয় গোপন রেখে মন্ত্রীর ফোন, জানতে চাইলেন তথ্য

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৫৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯১ বার।

একবছর আগে চালু হওয়া ই-কৃষি সেবার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘কৃষি বাতায়ন’ ও ‘কৃষক বন্ধু’ ফোন সেবার মান এবং কৃষি তথ্য পেতে মাঠ পর্যায়ের দু’জন কৃষি কর্মকর্তাকে ফোন করে কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ‘৩৩৩১’ নম্বরে ফোন করে দুই কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন কৃষি তথ্য পেয়েছেন মন্ত্রী।
 
মঙ্গলবার) সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের (এটুআই) সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনা সভায় দুই কর্মকর্তাকে ফোন দেন।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী ই-কৃষি সেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘কৃষি বাতায়ন’ ও ‘কৃষক বন্ধু ফোন সেবা’র উদ্বোধন করেন।
 
মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীর সঙ্গে কৃষকের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, কৃষি গবেষণার সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের সংযোগ সাধন, কৃষি তথ্যভিত্তিক জ্ঞানভাণ্ডার গড়ে তোলা এবং মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিবিধ প্রতিবেদন আদান-প্রদান সহজ করতে ‘কৃষি বাতায়ন’ তথা ‘৩৩৩১’ চালু করা হয়।
 
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করে দু’টি জেলায় কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
 
‘মন্ত্রী মহোদয় ফরিদপুর জেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এই সময়ে কী কী ফসল চাষ হচ্ছে, কৃষিপণ্যের মূল্য ইত্যাদি জানতে চান। তবে মন্ত্রী তার পরিচয় দেননি।’
 
পরে মন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, ই-কৃষি সেবার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘কৃষি বাতায়ন’ এবং ‘কৃষক বন্ধু’ ফোন সেবা। কৃষি বাতায়ন সেবা এমন একটি সেবা যার দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা যে কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে কৃষি সম্পর্কিত প্রশ্ন করা যাবে এবং এর উত্তরও পাওয়া যাবে।
 
মোবাইল ফোন সংযোজনের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স এগ্রিকালচার তথা ই-কৃষির প্রচলন টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোন শুধু কথা বলার জন্যই নয়। অনলাইন, ডিজিটাল সেন্টার ও কৃষকদের জন্য চালু করা অ্যাপ থেকে সব রকম তথ্য তারা পেতে পারেন। এর ফলে কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্যের বাজারদর জানতে পারবেন। কোন জেলায় কী কী ফসল উৎপন্ন হচ্ছে মোট ফসলের উৎপাদন ওই এলাকার ফসলের মূল্য জানা যাবে। ফলে সহজে কেউ আর কৃষকদের ঠকাতে পারবে না।
 
বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি কৃষককে ডিজিটাল সেবার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের ফসলের যে সব সমস্যা হয় তার সমাধান করতে পারেন। এটি কৃষকদের জন্য খুবই উপকার হবে। কৃষক সমাজকে সচেতন হতে হবে।
 
কৃষিমন্ত্রী গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে সবাইকে ইনোভেটিভ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কী করে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা যায় এবং খাদ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের উপায় বের করতে হবে। উদ্ভাবিত নতুন প্রযুক্তিকে কৃষকের খামারে ব্যবহার করতে হবে।
 
জনসংযোগ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, বাতায়নে এ পর্যন্ত ৭৯ লাখ কৃষকের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। কৃষকের ডাটাবেজ দ্বারা তার শিক্ষা, জীবনাচার,পরিবার ও অন্যান্য পেশা সম্পর্কে জানা যাবে যা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। পর্যায়ক্রমে তিন কোটি কৃষকের ডাটাবেজ তৈরি করা হবে।
 
অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও এটুআই এর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।