ঢাকার চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের লাশ বুঝে নিচ্ছেন স্বজনরা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:৩২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৫৬ বার।
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো মরদেহগুলোর মধ্যে থেকে কয়েকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তা স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খবর বিডিনিউজ২৪ডটকেম।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ  বলেন, বেলা সোয়া দুইটার দিকে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

“যাদের লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে সেগুলো তাদের স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

শনাক্ত মরদেহের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও এদিন ৩০-৩৫টি মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালে স্থাপিত ঢাকা জেলা প্রশাসনের তথ্যকেন্দ্র থেকে লাশ হস্তান্তরের সার্বিক দায়িত্বে থাকা ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সেলিম রেজা বলেন, “বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত আমরা ৩৭টি মরদেহ শনাক্ত এবং এর মধ্যে থেকে ১৫টি হস্তান্তর করেছি।

চকবাজার থানার এসআই প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, সুষ্ঠুভাবে লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সহায়তায় কাজটি করছে ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।

তথ্যকেন্দ্র থেকে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ইমরুল হাসান বলেছেন, মরদেহ সমাহিত করার জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।

যাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে

কামাল হোসেন (৪৫), পিতা: নূর মোহাম্মদ, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী, অসি উদ্দিন (২৩), পিতা: নাসির উদ্দিন, ধানমণ্ডি, ঢাকা, মোশাররফ হোসেন (৪৩), পিতা: মো. মাহফুজুর রহমান, নোয়াখালী, হাফেজ মো, কাউসার আহমেদ (২৬), পিতা: মো. খলিলুর রহমান, শ্রীপুর, হোমনা, কুমিল্লা, আলী হোসেন (৬৫), পিতা: মৃত বুলু মিয়া, নাটেশ্বর, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী, মো. ইয়াসিন (৩৩), পিতা: মৃত আবদুল আজিজ, ১৭ কেবি রোড, চকবাজার, ঢাকা, শাহাদৎ হোসেন (৩০), পিতা: মৃত মোসলেম উদ্দিন, নারায়ণপুর, ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা

আবু বকর সিদ্দিক (২০), মোহাম্মদপুর, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর, জুম্মন (৫২), ৩২/৩২ ওয়াসা রোড, চকবাজার ঢাকা, মজিবুর হওলাদার (৫০), সন্তোষপুর, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী, হেলাল উদ্দিন (৩২), নাটেশ্বর, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী, আশরাফুল হক (২০), পিতা: মৃত জামশেদ মিয়া, ফরহাদাবাদ, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ইমতিয়াজ ইমরোজ রাসু (২২), পিতা: নজরুল ইসলাম, বেড়া, পাবনা, মো. সিদ্দিক উল্লাহ (৪৫), নাটেশ্বর, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী, মাসুদ রানা (৩৫), পিতা: সাহেব উল্লাহ, নাটেশ্বর, সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকার কয়েকটি ভবনে লাগা আগুন সকালে নেভানোর পর ৭০টি লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানোর কথা জানায় কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ।

তবে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ ৬৭টি লাশ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

সংখ্যার গড়মিলের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক তারেক হাসান ভূইয়ার ভাষ্য, তাদের হিসাবে লাশ ৭০টি।

“তবে কয়েকটা ব্যাগে খণ্ড খণ্ড ডেডবডি ছিল। সম্পূর্ণ ডেডবডি হয়ত ৬৭টি হতে পারে।”

কয়েকটি লাশ এতটাই পুড়েছে যে চেনার ‍উপায় নেই।

যেসব লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হবে না, সেগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরবর্তীতে স্বজনদের সঙ্গে মিলিয়ে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ।

এছাড়া আগুনে দগ্ধ নয়জনকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশ দগ্ধ একজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

এর বাইরে আরও নয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।