বন্দি খালেদা জিয়ার চারপাশে ‘বিস্ফোরকের ডিপো’

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২২ বার।

পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলের কাছেই অবস্থিত নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে বিএনপি।

রোববার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমি গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতংকের সঙ্গে বলছি, আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা খালেদা জিয়াকে যে পরিত্যক্ত কারাগারে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তার চারপাশে রাসায়নিক বিস্ফোরকের ডিপো।

সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আমিরুল ইসলাম খান আলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া এক বছর ধরে নাজিমউদ্দন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। সেখানে তিনিই একমাত্র বন্দি। বুধবার রাতের অগ্নিকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যে ভবন, চকবাজারের চুড়িহাট্টার সেই ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের দূরত্ব মাত্র দেড় থেকে ২০০ মিটার দাবি করেন রিজভী।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, শুধুমাত্র প্রতিহিংসার লেলিহান অনলে দগ্ধ শেখ হাসিনা অবৈধ ক্ষমতার জোরে এমন একটি কেমিক্যাল বিস্ফোরকবেষ্টিত ভয়ংকর বারুদের ডিপোর মাঝখানে আতংকজনক পরিবেশে দেশনেত্রীকে এক বছর বন্দি রেখেছেন। তাকে এক অশুভ উদ্দেশ্যে ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিবেশে বন্দি করে রেখেছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী। আমাদের বক্তব্য এই মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি নির্দোষ, এই মুহূর্তে তার মুক্তি চাই।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে সারারাত চারদিকে বিকট শব্দ, মানুষের আর্তচিৎকার, রাসায়নিক বিস্ফোরণের ভয়ঙ্কর ও বিকট শব্দ গ্রাস করেছিল আশপাশের সব এলাকা। তাকে (খালেদা জিয়া) ভয়ংকর রকমের একটি পরিবেশের মধ্যে রাখা হয়েছে। অল্প দূরত্বে নির্ঘুম উৎকণ্ঠায় কেটেছে চরম অসুস্থ খালেদা জিয়ার।

রিজভী অভিযোগ করেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর শহীদ মিনারে যাওয়া উপলক্ষে রাত ১০টা থেকে আশপাশের রাস্তাঘাট সব বন্ধ করে দেয়ার কারণে পুরান ঢাকার উর্দু রোড, চানখারপুল, নাজিমউদ্দিন রোডে প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। এত জীবনহানিতে গভীর মর্মবেদনা ও দুঃখের কারণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল শহীদ মিনারের কর্মসূচির কিছুটা পরিবর্তন করে প্রশাসনকে আগুন নেভানোর কাজে সর্বাত্মক চেষ্টার নির্দেশ দেয়া। তাদের এহেন দায়িত্বহীন আচরণের কারণে মানুষের মূল্যবান জীবন ঝরে গেছে।

‘সরকার চকবাজার ট্র্যাজেডির দায় এড়াতে পারে না’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, এ ঘটনার দায় যেহেতু স্বীকার করেছেন এখন পদত্যাগ করুন। স্বচ্ছ ভোট জালিয়াতির সাফল্যের মৌতাতে বুঁদ হয়ে থাকবেন না। দেশবাসীকে দয়া করে রেহাই দিন। পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে এই বিভীষিকাময় ঘটনা ঘটলে দায় স্বীকার করে সরকার পদত্যাগ করত।

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় অগ্নিকাণ্ডে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা উচিত তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এই ধরনের উদ্ভট লোককে তথ্যমন্ত্রী করে আমার মনে হয় সরকার অন্যায় করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত তাকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই প্রধান করা।

চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হতে পারে এ বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রিজভী বলেন, আমাদের নেত্রী একটি ভুয়া মামলায় কারাগারে আছেন, স্থানান্তর নয় এই মুহূর্তে তাকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই। খবর যুগান্তর অনলাইন