মামলার ভয়ে অবশেষে বিএনপি ছাড়লেন শাহ আলম!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:১৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২১৭ বার।

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে আলোচিত-সমালোচিত জেলা কমিটির সহসভাপতি ও ফতুল্লা থানার সভাপতি শাহ আলম দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থাকায় এবার আর পদ পদবিতে আঁকড়ে থাকতে রাজি না বিএনপি নেতা শাহ আলম। সোমবার বিকালে শাহ আলম নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তবে শাহ আলম বলেন, স্বাস্থ্যগত কারণে এই পদে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয় বলে পদত্যাগ করেছি।

দেশ, জাতি ও জনগণের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে এসেছিলাম। তবে আমার মা-বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত আফিয়া-জালাল ফাউন্ডেশন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জান্নাহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আজীবন জনগণের সেবা করে যাব।

জনকল্যাণমূলক কাজে দলমত-নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা নিতে বিদেশে থাকাকালীন গত সেপ্টেম্বরে আমার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১১টি মিথ্যা মামলা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

সম্প্রতি বিষয়টি উচ্চ আদালতকে অবগত করে নাশকতার ওইসব মিথ্যা মামলা থেকে জামিন পেয়েছি।

এলাকাবাসী বলছেন, বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি শাহ আলমের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না।

রাজপথে নেয়া দলীয় কোনো কর্মসূচিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল না। মাঝেমধ্যে ঘরোয়া কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে থাকলেও সেটি খুব বেশি সময়ের জন্য ছিল না।

এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও শাহ আলমের সক্রিয় কোনো ভূমিকা নেই। তার অবস্থা অনেকটা ‘কিতাবে আছে গোয়ালে নেই’ প্রবাদের মতো।

এরই মধ্যে শাহ আলমের নিষ্ক্রিয় থাকাবস্থায় ঘনিয়ে আসে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

এই নির্বাচনে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও তাকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যেত না।

তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু বিএনপি অনেক দিন ধরেই ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। আবার কবে বিএনপি ক্ষমতায় আসে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা নেই। ফলে বিএনপিতে থেকে শাহ আলম আর নিজের ক্ষতি করতে চাচ্ছেন না। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকেই বেশি নজর দিতে চাচ্ছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ওয়ান এলেভেনের পর থেকে হঠাৎ করেই আলোচনায় আসার চেষ্টা করেন ফতুল্লার জালালউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে শাহ আলম।

ওই বছরে তৃতীয় ধারার কিছু রাজনৈতিক দল গঠন হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন শাহ আলম।

তিনি তখন নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডে একটি ইফতার মাহফিলে মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিমকে অতিথি করেন। ওই অনুষ্ঠানে অতিথিরা দেশের দুদলের দুই নেত্রীকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একটি মিলনায়তনে কিংস পার্টিখ্যাত কল্যাণ পার্টির প্রকাশ ঘটে। ওই অনুষ্ঠানে লোকজন নিয়ে শাহ আলম উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়ে কল্যাণ পার্টির জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

কল্যাণ পার্টির প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিম সেদিন তার বক্তব্যে শাহ আলমের ওপর দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব প্রদান করেন। শুরু হয় শাহ আলমের রাজনীতি। তখন শাহ আলম মোটা অঙ্কের টাকা কল্যাণ পার্টিকে অনুদান দেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে বিএনপির মনোনয়ন পান শাহ আলম। এ নির্বাচন নিয়েও অনেক নাটকীয়তা হয়। নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর কাছে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।