‘অপহরণ নাটক’ সাজিয়ে বাবার কাছ মুক্তিপণ দাবি, পুলিশের হাতে ধরা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২১ ১৭:৫৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৯ বার।

নওগাঁয় ‘অপহরণ নাটক’ ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অপহৃতসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান মিয়া তাঁর অফিসের মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য দিয়েছেন।

 

 

মামলার সূত্র ধরে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বদলগাছি উপজেলার গোয়ালভিটা গ্রামের জনৈক মো. সিদ্দিক রহমানের বড় ছেলে রাসেল রানা গত ৯ মে রবিবার সকাল ১০টায় বেতন উত্তোলনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং আর ফিরে আসেননি। ১১ মে পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ না পেয়ে অবশেষে বদলগাছি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করেন তার বাবা মো. সিদ্দিক রহমান। যার নম্বর ৪১৪, তারিখ ১১-০৫-২০২১ ইং। এরই মধ্যে উক্ত রাসেল রানার মোবাইল ফোন থেকে তার ছোটভাইয়ের মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে জানানো হয় বিকাশের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা না পাঠালে তাকে মেরে ফেলা হবে। এভাবে টাকা চেয়ে বারবার মোবাইল করতে থাকে। পরে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে বদলগাছি এবং জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক অভিযান এবং তল্লাশি শুরু করে। এজাহার দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৩ মে রাত প্রায় ১টায় অপহৃত রাসেল রানাকে বদলগাছি উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছন থেকে উদ্ধার করা হয়। তারপর তাকে নিয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে জয়পুরহাট জেলা সদর থেকে ঘটনার মূলহোতা একই উপজেলার রনাহার গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ ফাহিমকে আটক করা হয়। 

আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণ নাটকের আসল তথ্য বেরিয়ে আসে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে এটি অপহরণের সাজানো নাটক। কথিত অপহৃত রাসেল রানা মাদকাসক্ত এবং একজন চিহ্নিত জুয়াড়ি। এসব অপকর্মের ফলে বিপুল পরিমাণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এসব ঋণ পরিশোধের কোনো উপায় ছিল না তার। ফলে পাওনাদারদের কাছে অপদস্ত হতে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে পিতার কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ২ লাখ টাকা আদায়ের জন্য তার বন্ধু রামপুর গ্রামের নাজমুল হোসেনের বাড়িতে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যপারে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তথাকথিত অপহৃত রাসেল রানা ৯ মে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কথা বলে বেরিয়ে যায় আর ফিরে আসে না। স্বেচ্ছায় অন্তরালে চলে গিয়ে তার বন্ধুদের দিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মোবাইল ফোন করা। 

 

জানা গেছে, রাসেল রানার পিতার দায়ের করা এজাহারটি পরবর্তী সময়ে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। যা বদলগাছি থানার মামলা নম্বর ৯/১১৯, তারখি ১৩-০৫-২০২১ ধারা ৪১৭/৩৮৫/৩৮৭/৩৪ দণ্ডবিধি। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।