আমাকে সেদিন আদালতে আনা হয়নি: খালেদা জিয়া

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০১৯ ১৪:৩০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮৩ বার।

নাইকো দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান রোববার নতুন এ দিন ধার্য করেন।

রোববার এ মামলার শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হুইল চেয়ারে করে মামলার প্রধান আসামি কারবান্দি খালেদা জিয়াকে এজলাস কক্ষে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ।

এজলাসে প্রবেশের পর খালেদা জিয়া তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ওই দিন (২০ ফেব্রুয়ারি) কী হয়েছিল, আপনারা আসেননি? জবাবে মওদুদ আহমদ বলেন, ম্যাডাম আপনি তো আসেননি। তখন খালেদা জিয়া বলেন, আমি তো রেডি হয়ে বসেছিলাম, তারা (কারা কর্তৃপক্ষ) আমাকে বললো, আপনাকে যেতে হবে না।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে পারেননি বলে তার আইজীবীরা জানান। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সেদিন বলেছিল তিনি ঘুম থেকে উঠেননি।

রোববার সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামের পক্ষে নিদোষ দাবি করে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয়। এ সময় তাদের আইনজীবীরা খালেদা জিয়া ও মওদুদ আহমদসহ সকলের অব্যহতি প্রার্থনা করেন।

এরপর খালেদা জিয়ার পক্ষে মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার তার চিকিৎসা ও অভিযোগ শুনানি পেছানোর বিষয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটির তারিখ ধার্য ছিল। ওই দিন খালেদা জিয়াকে কেন উপস্থিত করা হয়নি। এ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। খালেদা জিয়া আজ আদালতে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই দিন তিনি রেডি হয়ে বসেছিলেন, কিন্তু তাকে আনা হয়নি।

মাসুদ তালুকদার আরও বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে বলেছেন। এ সময় বিচারক বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

মাসুদ তালুকদার আবার বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশের পর সরকার বোর্ড গঠন করে দিয়েছে। তাদের প্রতি আস্থা আনা কঠিন। এরপর বিচারক দুদকের বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজলের বক্তব্যে শুনতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা চলছে। খালেদা জিয়া ছাড়া সবার পক্ষে চার্জ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এখন খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি শুরু করলে ভালো হয়। চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, জেল কোর্ড আইনে যা আছে তাই তাকে দেওয়া হবে।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী শুনানি ১৯ মার্চ ধার্য করেন এবং চিকিৎসার বিষয়ে পরে আদেশ দেওয়া হবে। এরপর খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে মামলার শুনানি চলাকালে খালেদা জিয়া আদালত কক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আলাপ করতে দেখা যায়।

কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক।

প্রথমে মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। পরে ২০০৮ সালের ৫ মে মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।