ধুনটে আউশ উৎপাদনে রেকর্ড

আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ,ধুনট উপজেলা (বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
প্রকাশ: ০৯ অগাস্ট ২০১৮ ১৫:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪৫৪ বার।

ধানের ভারে নুয়ে পড়া শীষ গুলো উচিয়ে ধরলে যেন চকচক করছে সোনা। আউশ ধানে যেন সোনার রূপ। যার আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কৃষকের মুখ। অসময়ে আউশ চাষে সাফল্য পেয়ে কৃষকের মনে বিরাজ করছে আনন্দের বন্যা। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় চলতি বছর আউশ উৎপাদন হয়েছে রেকর্ড পরিমানে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুস ছোবহান বলেন, ধুনট উপজেলা বন্যা প্রবন এলাকা। যার কারনে বোরো ধান কাটার পর জমি পতিত রাখতেন কৃষক। কিছু সংখ্যক এলাকায় উঁচু জমিতে কৃষক ধান ব্যতিত অন্য ফসল চাষ করতেন। আউশ ধানের জীবনকাল কম হওয়ায় একই জমিতে ৩-৪টি ফসল চাষ করা সম্ভব হয়। এছাড়া স্বল্প ব্যয়ে আউশ ধান চাষ করে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে। বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। প্রাথমিক ভাবে কৃষি বিভাগের আহ্বানে সারা দেয়নি কৃষক। প্রায় ৬ বছর আগে ধুনট উপজেলায় ৬৪০ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করে কৃষক। কৃষি কর্মকর্তাদের তৎপরতা এবং আউশ চাষে সাফল্য পাওয়ায় প্রতিবছরই তুলনামুলক হারে আউশ চাষ বৃদ্ধি পায়। গত বছর প্রায় ৩ হাজার ৯৩৭ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ হয়। কিন্তু চলতি বছর আউশ চাষে যেন বিপ্লব ঘটেছে। প্রায় ১৪ হাজার কৃষক ১২হাজার ৮২৫ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে কৃষক ধান কাটতে শুরু করেছেন। বিঘায় ১৮-২০ মান ধান উৎপাদন হয়েছে। এতে ধুনট উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৫০মন আউশ ধান উৎপাদন হয়েছে।  
আড়কাটিয়া গ্রামের কৃষক নূর ইসলাম বলেন, আউশ ধানের জমিতে সেচ দিতে হয়নি। অন্যদিকে সরকারি ভাবে বীজ, সার সহায়তা পেয়েছি। ফলে আউশ চাষে নামমাত্র ব্যয় হয়েছে। কিন্তু আউশ চাষ করে বিঘায় ১৮-২০মন ফলন পেয়েছি।
আড়কাটিয়া গ্রামের কৃষক ফরিদা পারভিন জানান, বিগত বছরে এই সময়ে জমি পতিত থাকতো। এবার আউশ ধান চাষ করে সাফল্য পেয়েছি। এছাড়া আউশ ধান কাটার পরে ওই জমিতে আগাম রবিশষ্য করার সুযোগ পাওয়া যায়। এজন্য আউশ ধান চাষ করা সবদিক থেকেই সুবিধা। একই গ্রামের আউশ চাষী হায়দার আলী বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করতে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এক বিঘা জমির ধান ও খড় বিক্রি হবে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ কম হয় এবং অধিক লাভের কারনে কৃষকের কাছে আউশ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত কৃষককে আউশ চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারি ভাবে বীজ, সার ও সেচ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এবছর ১৫০জন কৃষককে আউশ প্রনোদনা পেয়েছেন। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাগণ আউশ চাষের জন্য কৃষকদের কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছেন। যার কারনে আউশ ধান চাষ ও উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।