তিস্তার পানির ন্যায্য দাবিতে বগুড়ায় বাসদের রোডমার্চ শুরু

অসীম কুমার কৌশিক
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০১৯ ১২:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২১৬ বার।

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মরুকরণের হাত থেকে উত্তরবঙ্গকে রক্ষার দাবিতে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের(বাসদ) উদ্যোগে বগুড়ায় রোডমার্চ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার শহরের সাতমাথায় সকাল ১১ টায় দুই  দিন ব্যাপী (বগুড়া থেকে তিস্তা ব্যারেজ  পর্যন্ত) ওই রোডমার্চ সমাবেশের উদ্বোধন করেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান।  

বগুড়া জেলা  আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম পল্টুর সভাপতিত্বে পদ্মার অববাহিকা পানির তীব্র সংকটের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রায় ১২০০ নদীর দেশ বাংলাদেশ। ভারতের ক্রমাগত পানি আগ্রাসন এবং সরকারের ভুল পানি ব্যবস্থাপনার কারণে দেশ আজ মরুভুমিতে পরিণত হবার উপক্রম হয়েছে। ৫৭ টি আনর্জাতিক নদী বাঙ্গলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। যার মধ্যে ৫৪ টি এসেছে ভারতের মধ্যে দিয়ে। ভারত সরকার ইতিমধ্যে ৫১ টি নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার শুরু কএছে। আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের নামে বাংলাদেশের চারদিকে বাঁধের মালা তৈরি করতে যাচ্ছে। ফারাক্কার প্রভাবে পদ্মা অববাহিকা পানির তীব্র সংকটে পড়েছে। এবং আন্তর্জাতিক সমস্ত নীতিমালা একের পর এক লংঘন করছে ভারত।‘

তিস্তার পানি সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের প্রধান এবং বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম নদী তিস্তাও আজ ভারতের পানি আগ্রাসনের শিকার। উজানে অসংখ্য বাঁধ, ব্যারেজ, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে তিস্তা আজ মৃতপ্রায়। এবং এই নদীর পানি প্রবাহও সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌছেছে। তাই এই সর্বনাশ রুখতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ায় করতে হবে।‘

বাংলাদেশে নদী ও পানি সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলা করার কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ তার বক্তব্যে বলেন, ‘শাসকবর্গ ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত পর্যায়ে রয়েছে দাবি করলেও ভারতের পানি আগ্রাসনে বাংলাদেশ বিপর্যস্ত। তাই নদী ও পানি সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলায় সারাদেশের সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।‘

 

এছাড়াও সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাজেকুজ্জামান রতন, নওগাঁ জেলার সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন মুকুল, সিরাজগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক নব কুমার কর্মকার, বগুড়া জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, নাটোরের দেবাশীষ রায় এবং রাজশাহীর জেলা সমন্বয়ক আলফাজ হোসেন যুবরাজ, শহিদুল ইসলাম, দিলরুবা নূরী, শ্যামল বর্মন এবং রাধা রাণী বর্মনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশ শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি র‍্যালি বের হয়। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে র‍্যালিটি তিস্তার ব্যারেজের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পথিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তারা সমাবেশ শেষে রংপুরে গিয়ে রাত্রিযাপন করবে। সবশেষে তিস্তা ব্যারেজ সাধুর বাজার গিয়ে সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়।