বিচ্ছেদের মাশুল সাড়ে ৩ হাজার কোটি ডলার

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৫৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৩ বার।
বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য স্ত্রী ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের রফায় পৌঁছেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জেফ বেজোস।

২৫ বছর সংসার করার পর গত জানুয়ারিতে টুইট করে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন অনলাইনে পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা বেজোস ও ম্যাকেঞ্জি।

রয়টার্স জানিয়েছে, অ্যামাজনের সিইও বেজোসের হাতে এতদিন কোম্পানির ১৬.৩ শতাংশ শেয়ার ছিল, যার অর্থমূল্য ১৪৩ বিলিয়ন ডলার।

বিচ্ছেদের চুক্তি অনুযায়ী এর ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা পাচ্ছেন ম্যাকেঞ্জি, তবে কোম্পানির বোর্ডে তার ভোটিং ক্ষমতা তিনি বেজোসকেই দিয়ে দিচ্ছেন। 

ফলে অ্যামাজনে বেজোসের শেয়ার আর সম্পদের পরিমাণ কমলেও কোম্পানির ওপর তার নিয়ন্ত্রণ আগের মতই থাকছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট আর বেজোসের স্পেস ট্র্যাভেল ফার্ম ব্লু অরিজিনের শেয়ারের ভাগও সাবেক হতে চলা স্বামীর হাতে ছেড়ে দিচ্ছেন ম্যাকেঞ্জি।   

বিবিসি লিখেছে, বেজোস-ম্যাকেঞ্জির সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলারের এই বিচ্ছেদ আগের সব রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়েছে।

এর আগে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ডিভোর্সের রেকর্ড ছিল আর্ট ডিলার অ্যালেক ওয়াইল্ডেনস্টাইন ও তার স্ত্রী জোসেলিনের। ১৯৯৯ সালে সেই ডিভোর্সের রফা হয়েছিল ৩৮০ কোটি ডলারে।

বৃহস্পতিবার এক টুইটে ম্যাকেঞ্জি লিখেছেন, ‘পরস্পরের সহযোগিতায়’ বিয়ে বিচ্ছেদের এই পর্ব চুকাতে পেরে তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

View image on Twitter

চার সন্তানের বাবা-মা বেজোস আর ম্যাকেঞ্জির সংসার শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে অ্যামাজনের যাত্রা শুরুরও আগে। সে সময় তার দুজনেই কাজ করতেন হেজ ফান্ড ডি ইতে।

বেজোস অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করলে ম্যাকেঞ্জিও সেখানে যোগ দেন। তিনি ছিলেন অ্যামাজনের প্রথম কর্মীদের একজন। 

সেই অ্যামাজন এখন পরিণত হয়েছে বিরাট এক প্রতিষ্ঠানে। গতবছর এই ই-কমার্স কোম্পানির বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৩২.৮ বিলিয়ন ডলার। এই অ্যামাজনই বেজোসকে ১৩৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক করেছে। 

ম্যাকেঞ্জির আরেকটি পরিচয় হল তিনি একজন গল্পকার। ‘দি টেস্টিং অব লুথার অলব্রাইট’ এবং ‘ট্র্যাপস’ নামে দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে তার।  

বেজোসের বয়স এখন ৫৪ বছর, আর ম্যাকেঞ্জির ৪৮। গত জানুয়ারিতে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই দম্পতির বিচ্ছেদের খবর আসার পর জেফ বেজোসের গোপন প্রেমের খবর আসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে। 

ফক্স টিভির সাবেক উপস্থাপিকা লরেন সানচেজের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই বেজোসের সংসার ভেঙেছে কি না, সে বিষয়েও নানা জল্পনা কল্পনা চলে। বেজোসের তরফ থেকে সে সময় বলা হয়, তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।  

বিচ্ছেদের মাশুল গুণতে গিয়ে বেজোসকে এখন শীর্ষ ধনীর মুকুট হারাতে হবে। সেক্ষেত্রে হয়ত ধনীদের তালিকায় আবার শীর্ষস্থানে ফিরবেন মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।

ফোর্বস জানিয়েছে, ডিভোর্সের মাধ্যমে যে টাকার মালিক হচ্ছেন ম্যাকেঞ্জি, তাতে তিনি পরিণত হচ্ছেন বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী নারীতে।

অবশ্য ওয়াশিংটন রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী তিনি যদি বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বেজোসের সম্পদের আধাআধি ভাগ চাইতেন, তাহলে শীর্ষ নারী ধনীর তালিকায় তার নাম ১ নম্বরেই থাকত।