শিবগঞ্জে ২০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন পুরণ হতে চলেছে

শিবগঞ্জ উপজেলা (বগুড়া) সংবাদাতা
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:১৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬০০ বার।

বগুড়ার শিবগঞ্জে ২০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন পুরণ হতে যাচ্ছে। সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় লাগোয়া পৌর এলাকায় করতোয়া নদীর অর্জনপুর ঘাটে সেতু নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এ জন্য চার কোটি ৮০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরই সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হবে। সেতুটি নির্মাণ হলে ওই এলাকার ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন। তাঁরা সহজেই উপজেলা সদরে আসতে পারবেন। এখন তাদের প্রায় চার কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। 
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরে পৌর এলাকার অজুর্নপুর মহল্লা। সেই মহল্লার প্রায় চার সহস্রাধিক মানুষকে বিভিন্নকাজে উপজেলা সদরে আসতে ঘুরতে হয় চার কিলোমিটার সড়ক। এজন্য তারা স্বাধীনতার পর থেকেই রাঙামাটিয়া ও অজুর্নপুরকে বিভক্ত করা করতোয়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই সময় থেকে অনেক জনপ্রতিনিধিরাই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কেউ সে প্রতিশ্রুতি পুরণ করেননি। তখন তারা নৌকায় করে পারাপার হতেন। কিন্তু এরই মধ্যে করতোয়া নৌকাডুবিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়। 
সেতুটি নির্মাণ হলে অর্জুনপুর, ছয়ঘড়িয়া পাড়া, গরীবপুর, আকন্দপাড়া, ধোন্দাকোলা, সন্নাসী ধোন্দাকোলা, দেবীপুর, খালিসপুর, অনন্তপুর, উথলী, রথবাড়ি, নারায়নপুর, ছোট নারায়নপুর, বাগমারাসহ ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ স্বল্প সময়ে উপজেলা সদরে আসতে পারবেন। 
অজুর্নপুর মহল্লার বাসিন্দা জাহেদুল ইসলাম বলেন, গত তিন বছর আগে পৌরসভা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মানিক নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলে, “ভোটে তাকে নির্বাচিত করলে তিনি সেতু দেবেন।” তাঁর এই ঘোষণায় গ্রামের অবাল বৃদ্ধ বনিতারা ভোট যুদ্ধে নেমে তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন। 

শিবগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রাশেদ হাসিম বলেন, মেয়র মহোদয়ের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে সেতুটি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। এজন্য শিবগঞ্জ পৌরসভা ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চার লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৬৩টি মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪মিটার প্রস্থের এ সেতুটি হবে অত্যাধুনিক নকশায়। এরইমধ্যে সেতু নির্মাণ স্থানের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বিশেষজ্ঞদল। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই সেতু নির্মানের দরপত্র আহবান করতে পারবো।
শিবগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোমিনুল ইসলাম মোমিন বলেন, রাঙামাটিয়া ও অজুর্নপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় আশেপাশের ২০ গ্রামের মানুষকে জরুরি প্রয়োজনে যেমন মূমুর্ষ রেগীকে নিয়ে উপজেলা সদরের হাসপাতাল, ভুমি অফিস, পুলিশ স্টেশনে (থানা) ব্যাংক সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে চার কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। এজন্য এই নদীকে আমরা অভিশাপ মনে করতাম। কিন্তু মেয়র মহোদয়ের পরিশ্রমের ফলে মানুষের সেই দুঃখ কষ্ট লাঘব হতে চলেছে। করতোয়া পাড়ে এখন আনন্দের বন্যা বইছে। 
শিবগঞ্জ পৌরসভা মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন, সেতুটি নির্মাণ করার ছিল আমার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন বলেই ২০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন পুরণ হতে চলেছে। তিনি বলেন, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসেই সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হবে ইনশাল্লাহ।