স্কুলে যেতে পারছে না ছেলে: লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম

শেরপুরে মামলা তুলে নিতে হুমকি, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাদি ও তার পরিবার

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:৫২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৩ বার।

বগুড়ার শেরপুরে আলু চাষি খয়বর হোসেনকে জিম্মি করে ৫০০ বস্তা আলু লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেন ওই আলু চাষি। কিন্তু এরপর থেকেই মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য বাদি ও তার পরিবারকে নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন অভিযুক্তরা। ফলে দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে এই কৃষক পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি বাদি ও তার স্কুল পড়–য়া ছেলেকে অপহরণসহ প্রাণনাশের অব্যাহত হুমকি-ধামকির মুখে পরিবারটি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় হৃদয় বাবু নামে এই ছেলেটি নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছেন না। এতে করে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শেষমেষ উপায়অন্ত না পেয়ে থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। ঘটনাটি জানিয়ে আলু চাষি খয়বর হোসেন মঙ্গলবার (২৩এপ্রিল) শেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন। যার নং-১৪৪০।


থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরী থেকে জানা যায়, উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দারুগ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে কৃষক খয়বর হোসেন সাড়ে ৮বিঘা জমি লীজ (পত্তন) নিয়ে আলু চাষ করেন। একইসঙ্গে জমির মালিককে প্রতিবিঘায় সাড়ে নয় হাজার টাকা করে জমির পত্তনী মূল্য পরিশোধ করে দেন। পাশাপাশি মৌসুমের শেষে আলু উত্তোলন শুরু করে করেন তিনি। কিন্তু পূর্ব শক্রতার জেরে একই গ্রামের ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, নাছির উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম ও মো. বাবলু মিয়া তার আবাদি জমির আলু লুটে নিতে নানামুখি পায়তারা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১মার্চ দিনে-দুপুরে শেরপুর শহরের ৩০-৩৫জন ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে হানা দেয় তারা। এমনকি ওই আলু চাষির লাগানো উক্ত পরিমান জমির উত্তোলনকৃত ৫০০বস্তা আলু জোরপূবর্ক লুটে নিয়ে ট্রাকেভরে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।


থানায় জিডি করতে এসে ভুক্তভোগী কৃষক খয়বর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনার বিচার চেয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। কিন্তু মামলা দায়েরের পর থেকেই মামলার আসামিরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে তাকেসহ তার একমাত্র ছেলে হৃদয় বাবুকে অপহরণ করে প্রাণনাশ করা হবে বলেও অব্যাহতভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীদের ভয়ে পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ফলে নবমশ্রেণীতে পড়–য়া তার একমাত্র ছেলেটি নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছেন না। এতে করে ছেলেটির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। শেরপুর থানার ডিউটি অফিসার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাব্বী এ প্রসঙ্গে জানান, উক্ত ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরী নেয়া হয়েছে। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।