বগুড়ায় ঘরে ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা: বোন ও ভগ্নিপতি আটক

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৪ মে ২০১৯ ১০:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬১৭ বার।

বগুড়ায় মারুফ হোসেন পাভেল (৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে তার ঘরে ঢুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের দক্ষিণ চেলোপাড়া এলাকায় ওই হত্যাকা- ঘটে। নিহত পাভেল ওই এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত পাভেলের বোন লাভলী আকতার ও তার স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিককে থানায় নেওয়া হয়েছে।
শহরের দক্ষিণ চেলোপাড়ার নাইট স্কুল লেনের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের একাধিক বাড়ি ও দোকান রয়েছে। ডুপ্লেক্স ধরণের পুরানো বাড়িগুলোর একাধিক ঘর বসবাসের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মকবুল হোসেনের তিন স্ত্রী। তাদের ৩ ছেলে এবং ৪ মেয়ের মধ্যে প্রথম স্ত্রীর এক ছেলে, দ্বিতীয় স্ত্রীর ৩ মেয়ে ও এক ছেলে এবং তৃতীয় স্ত্রীর গর্ভে এক ছেলে ও মেয়ে জন্ম গ্রহণ করে। নিহত পাভেল তৃতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত ছিল। তবে মকবুল হোসেনের অপর দুই ছেলে সন্তান ইতিপূর্বে মারা গেছে। পাঁচ মাস আগে মকবুল হোসেন মারা গেলে তার ৪ মেয়ে বাবার বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করে।
নিহত পাভেলের বোন লাভলী আকতার জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাভেলকে তার ঘরের সামনের বারান্দায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন তাদের এক ভাড়াটিয়া। এরপর তিনি সেখানে গিয়ে তার ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তাকে দ্রুত বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মতে পাভেল তার ঘরেই ছিল। কেউ তার ঘরে ঢুকে গুলি করে চলে গেছে। পরে পাভেল হয়তো ছট ফট করতে করতে বারান্দায় এসে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাভেলের ঘরে তার অনেক বন্ধুর আসা-যাওয়া ছিল। এছাড়া কিছুদিন আগে একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেফতারের জন্য তাঁর খোঁজে বাড়িতে পুলিশ এসেছিল।’
ওই এলাকার পৌর কাউন্সিলর পরিমল চন্দ্র দাস জানান, পাভেলদের বাড়ি অনেক বড়। তাছাড়া ওই বাড়িতে তাদের নিজ পরিবার ও ভাড়াটিয়া মিলে অর্ধশত মানুষ বসবাস করে। সেখানে বাইরের কারো পক্ষে পাভেলের কক্ষে গিয়ে গুলি চালানো সম্ভব নয়। তার মতে পরিচিত কেউ ঘরে ঢুকে পাভেলকে গুলি করে আবার চলে গেছে।
কাউন্সিলর পরিমল চন্দ্র দাস জানান, পাভেলর বাবা মৃত্যুকালে প্রচুর সম্পত্তি রেখে গেছেন। তার ৭ সন্তানের মধ্যে ৪ মেয়ে জীবিত থাকলেও ৩ পুত্রের মধ্যে শুধু পাভেলই জীবিত ছিল। তিনি বলেন, পাভেলের নির্দিষ্ট কোন পেশা ছিল না। বাড়ি  ও দোকান ভাড়া তুলে জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বোনদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। কিছুদিন আগে সে তার অংশের সম্পত্তির দখল পেতে কাউন্সিলর অফিসে আবেদন করেছিল। এরপর সেটি নিয়ে একটি সালিশও করা হয়েছিল।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, পাভেলের ডান পায়ের উরুতে পুরুষাঙ্গের কাছাকাছি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
 কে কা বারা তাকে কেনই বা পাভেলকে হত্যা করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বদিউজ্জামান বলেন, ‘এটি এখনই বলা সম্ভব নয়। আমরা তদন্ত করছি।’ সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে পাভেলের সঙ্গে তার বোনদের বিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।’ সদর থানার ওসি (তদন্ত) কামরুজ্জামান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত পাভেলের বোন লাভলী আকতার এবং ভগ্নিপতি আবু বক্কর সিদ্দিককে থানায় আনা হয়েছে।