ছবি তুলতে গিয়ে ৫ সাংবাদিক হামলার শিকার

বগুড়ায় ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারে হামলা: ছাত্রদল সভাপতি আহত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০১৯ ১০:৪৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৬২ বার।

বগুড়ায় ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা এলাকায় চালানো ওই হামলায় ছাত্রদলের জেলা সভাপতি আবু হাসান আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত ৫ সাংবাদিকও হামলার শিকার এবং লাঞ্ছিত হয়েছেন। ওই হামলার প্রতিবাদে বিকেলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
বিএনপি’র পক্ষ থেকে তাদের নির্বাচনী প্রচারে হামলার জন্য ছাত্রলীগের শাজাহানপুর উপজেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলকার নাইন এবং তার অনুসারীদের দায়ী করা হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস দাবি করেছেন হামলায় ছাত্রলীগের কোন পর্যায়েরই কেউ জাড়িত নন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনাটি তারা খতিয়ে দেখছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জানান, বগুড়া-৬ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট সাবেক সাংসদ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় ধানের শীষের লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি আবু হাসান এবং অপর নেতা সাইদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীও তার সঙ্গে ছিলেন। তারা সাতমাথার উত্তর দিকে যেখানে পত্রিকা বিক্রি করা হয় সেস্থানে যখন লিফলেট বিতরণ করছিলেন তখন ছাত্রলীগ শাজাহানপুর উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলকার নাইনের নেতৃত্বের তার একদল অনুসারী ধর ধর শব্দ করে এগিয়ে আসে। এরপর তারা ওই স্থানে একটি ভ্রাম্যমাণ দোকানে রস তৈরির জন্য কেটে রাখা ৩/ ৪ ফুট লম্বা আখ দিয়ে ধানের শীষের প্রচারে অংশ নেওয়া বিএনপি ও ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। এ সময় সাবেক সাংসদ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তখন ছাত্রদল সভাপতি আবু হাসান দৌড়ে সাতমাথার দক্ষিণে পুলিশ বক্সের ভেতরে আশ্রয় নেন।
ওই ঘটনার ছবি তুলতে গেলে বৈশাখী টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন মামুন, যমুনা টিভির ক্যামেরাপার্সন শাহনেওয়াজ শাওন, ফটো সাংবাদিক আল-আমিন, দৈনিক খোলাকাগজের বগুড়া প্রতিনিধি আব্দুর রহিম ও সুমন সরদার নামে অপর এক সাংবাদিক হামলার শিকার এবং লাঞ্ছিত হন। বগুড়া প্রেসক্লাবের সদস্য আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় প্রকাশ্য দিবালোকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার ছবি  ধারণ করছিলাম। এসময় হামলাকারীরা আমার ক্যামেরা লক্ষ্য করে হামলা চালায়।’
দলীয় সভাপরি ওপর হামলার প্রতিবাদে পরে বিকেল পৌণে ৪টার দিকে ছাত্রদলের উদ্যোগে নওয়াববাড়ি সড়কে জেলা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। সমাবেশ থেকে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাাবি জানিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার আহবান জানানো হয়।
বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আলী আজগর হেনা অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগ শাজাহানপুর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলকার নাইনের নেতৃত্বে শত শত মানুষের সামনে শহরের একেবারে জিরো পয়েন্টে ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারে হামলা চালানো হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে নষ্ট করে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিতে চায়। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ তবে ছাত্রলীগ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছন। তিনি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পরি ওই ঘটনায় আমার সংগঠনের নেতা-কর্মী তো দূরের কথা একজন সদস্যও জড়িত নন।’
জানতে চাইলে বগুড়া সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা কোন অভিযোগ পাননি। তবে হামলার ওই ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হামলাকারী কারা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা তো বলছেন ছাত্রলীগের তৃতীয় একটি গ্রুপ হামলা চালিয়েছে।’