বগুড়ার ধুনটে পুলিশের ওপর হামলা  চালিয়ে আসামী ছিনতাই: ২৪জন গ্রেফতার

ধুনট উপজেলা (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০১৯ ১১:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৫৭ বার।

বগুড়ার ধুনটে হত্যা মামলার আসামীদের ধরার জন্য অভিযানকালে সিআইডি ও থানা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় ২৪ নারী ও পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঈদের দিন বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের ভালুকাতলা গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। হামলায় চার পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। তারা হলেনÑপুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) এসআই সেলিম রেজা, এ এসআই রেজওয়ানুল হক, এএসআই শাহীন বাবুল ও ধুনট থানার এএসআই শাহজাহান আলী। 
পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছে তারা হলো- চিকাশী ইউনিয়নের হটিয়ারপাড়া গ্রামের কাসেম ফকিরের ছেলে মারুফ হোসেন (২৮), মোস্তফার ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৩), ভালুকাতলা গ্রামের ইফাত উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসেন (৩৫), দিলবর মন্ডলে ছেলে দুলাল মিয়া (৩৮), আলাল হোসেনের স্ত্রী গোলাপি খাতুন (৫০), মজনু মিয়ার স্ত্রী আছমা খাতুন (২৬), সোলায়মান আলীর স্ত্রী শাহেনা খাতুন (৪০), আলতাফ আলীর স্ত্রী সাহেদা খাতুন (৫০), মুক্তা মন্ডলের স্ত্রী মেরিনা খাতুন, ফরায়জুল হোসেনের স্ত্রী শিল্পি খাতুন (২৫), দুদু মন্ডলের স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন (৩৫), মনমিয়ার স্ত্রী বিউটি খাতুন, গোলজার হোসেনের স্ত্রী (রিনা খাতুন (২৫), শহিদুল ইসলামের স্ত্রী কহিনুর খাতুন (৩০), জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৩৩), জামাল উদ্দিনের স্ত্রী গোলছে আরা (৫০), আব্দুল মজিদের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন (৪০), মাফুজার রহমানের স্ত্রী সোনাভান (৩৫), ইলিয়াস আলীর স্ত্রী অলেফা খাতুন (৫০), ঝিনাই মধ্যপাড়ার জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী লাকি খাতুন (২৭), ভালুকাতলা গ্রামের সেকেন্দার মন্ডলের ছেলে তোজাম্মেল হক শিপন (৩০), বাকি মন্ডলের ছেলে রুবেল হোসেন (৩৮), ঝিনাই গ্রামের হাসেম প্রামানিকের ছেলে সোহরাব হোসেন (৬৫) ও তার ছেলে নজরুল হোসেন (৪৫)। 
পুলিশ জানায়, প্রায় এক বছর আগে ২০১৮ সালের ১ মার্চ চিকাশী ইউনিয়নের চাপড়া বিল থেকে হেমায়েত উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় তার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পড়ে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের  (সিআইডি) ওপর। সিআইডির কাছে খবর ছিল যে ওই হত্যা মমলার আসামীরা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে ফিরেছে। তাই তাদের গ্রেফতারের জন্য ঈদের দিন বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পরে ধুনট থানার এক এএসআইকে নিয়ে সিআইডির কর্মকর্তারা ঝিনাই গ্রামে যান। ওই গ্রামে শ্বশুড় বাড়ি থেকে আলোচিত ওই মামলার ৩নং আসামী শাহীন আমকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়। তাকে নিয়ে আসার সময় শ্বশুড়বাড়ির লোকজন বাধা দেন এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে আসামীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে। পরে ওই মামলার এক নম্বর আসামী লিটন ম-লকে ধরতে পুলিশ কর্মকর্তারা পাশের ভালুকাতলা গ্রামে যান। তাকে গ্রেফতারের পর পরই লিটন ম-লের স্ত্রী ও সন্তানসহ স্বজনরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে লোক জড়ো করে এবং ৫০/৬০জন মিলে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামী লিটন ম-লকে ছিনিয়ে নেয়। পরে খবর পেয়ে ধুনট থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 
ধুনট থানার এসআই প্রদীপ কুমার জানান, ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআইডি’র এসআই সেলিম রেজা বাদী হয়ে ধুনট থানায় সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও মারধর করে পুলিশকে আহত করার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পলাতক লিটন ম-লসহ ১১জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০জনকে আসামী করা হয়েছে।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ঝিনাই ও ভালুকাতলা গ্রামের লোকজন যৌথ ভাবে হামলা চালিয়ে সিআইডি ও পুলিশের চার কর্মকর্তাকে আহত করেছে। তারা হত্যা মামলার প্রধান আসামী লিটন ম-লকে ছিনিয়ে পালাতে সাহায্য করেছে