বাজেট অধিবেশন শুরু

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০১৯ ১৩:১২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২০ বার।

একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৬ মিনিটে শুরু হওয়া এ অধিবেশনেই আগামী বৃহস্পতিবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। বাজেট অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার চলতি অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেন।

স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা সংসদ পরিচালনা করেন। এ অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- রফিকুল ইসলাম, এবি তাজুল ইসলাম, হাবিবে মিল্লাত, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মেহের আফরোজ চুমকি। 

এর আগে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কার্য উপদেষ্টা কমিটির তৃতীয় সভায় কমিটির সভাপতি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া কমিটির সদস্য রওশন এরশাদ, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, মো: ফজলে রাব্বী মিয়া, আনিসুল হক, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং নূর-ই-আলম চৌধুরী সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, আগামী ১৩ জুন বৃহস্পতিবার ২০১৯-’২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হবে। ১৪ ও ১৫ জুন দুইদিন বন্ধ থাকার পর ১৬ জুন সম্পূরক বাজেটের উপর আলোচনা শুরু হবে। ১৭ জুন সম্পূরক বাজেট পাশ করা হবে। ১৮ জুন হতে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে।

আগামী ২২ ও ২৯ জুন এই দুই শনিবার অধিবেশন কার্যক্রম চলবে। ৩০ জুন ২০১৯-’২০ অর্থবছরের বাজেট পাশ করা হবে। এরপর ১ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত অধিবেশন বন্ধ থাকেেব। ৭ জুলাই থেকে ১১জুলাই পর্যন্ত এ অধিবেশন চলবে। প্রতিদিন বিকাল ৩ টায় অধিবেশন শুরু হবে।

সভায় জানানো হয় একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে সংসদে উত্থাপণের জন্য কোনো সরকারি বিলের নোটিশ পাওয়া যায়নি। আগে অনিষ্পন্ন ৩টি সরকারি বিল পাশের জন্য কমিটিতে পরীক্ষাধীন রয়েছে। বেসরকারি সদস্যদের নিকট হতে কোনো বিলের নোটিশ পাওয়া যায়নি। আগে পাওয়া ও অনিষ্পন্ন ১টি বেসরকারি বিল রয়েছে।

এ অধিবেশনের জন্য এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর জন্য ৮৩টি ও সাধারণ প্রশ্ন ১ হাজার ৮৫১টিসহ প্রাপ্ত মোট প্রশ্নের সংখ্যা ১ হাজার ৯৩৪টি । এছাড়া ১৭০টি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব (বিধি ১৩১) ও ৪৭টি মনোযোগ আর্কষনের নোটিশ (বিধি ৭১) পাওয়া গেছে।

সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান সভার কার্যপত্র উপস্থাপন করেন। এ সময় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর প্রথম বাজেট দিতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠক শুরু হয়।

শুরুতে এই সংসদকে বয়কটের ঘোষণা দিলেও নানা নাটকীয়তার পর দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালে ৯০ দিনের মেয়াদের শেষ দিনে শপথ নেন বিএনপির এমপিরা। গত ২৪ এপ্রিল শুরু হয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন শেষ হয়েছিল ৩০ এপ্রিল। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বসা ওই অধিবেশনে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল বিএনপি সদস্যদের শপথ ও সংসদে যোগ দেওয়ার ঘটনা।

সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, ৩০ জুনের মধ্যে বাজেট পাসের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সাধারণত প্রতি বছর জুনের প্রথম সপ্তাহে বাজেট অধিবেশন শুরু হলেও এবার ঈদের ছুটির কারণে দ্বিতীয় সপ্তাহে বসতে যাচ্ছে। এ কারণে বাজেটের ওপর সদস্যরা আলোচনার সুযোগ কম পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বরাবরের মতোই বাজেট পেশের আগে সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে তা অনুমোদন করা হবে। বাজেট অধিবেশন সম্পর্কে সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাজেট পেশের দিন রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতিসহ বিশিষ্টজন সংসদে উপস্থিত থাকবেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এবারের বাজেটের আকার হতে পারে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো। পুঁজিবাজারে দরপতন, নতুন মন্ত্রিসভা, নতুন অর্থমন্ত্রী, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, মাদক নির্মূলসহ বিভিন্ন ইস্যুর কারণে এবারের বাজেট আলোচিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজেট পেশের পর সংসদ সদস্যরা প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা করবেন। পরে ৩০ জুন ওই বাজেট পাস হবে।

সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস ছাড়াও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল সংসদের বিবেচনার অপেক্ষায় রয়েছে। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্যরাও এবারের অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তাদের পক্ষ থেকে একটি বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাবও জমা পড়েছে। তবে এই প্রস্তাব সংসদের বৈঠকে আলোচনা হবে কি-না, তা নির্ভর করছে স্পিকারের সিদ্ধান্তের ওপর।