সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী জি এম সিরাজ

বগুড়ায় খালেদা জিয়ার আসনে নির্বাচন ফেয়ার হবে, কারণ সরকার ইভিএম জায়েজ করতে চায়

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১২ জুন ২০১৯ ১৩:৫২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪৫৩ বার।

আগামীতে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমকে জাস্টিফাই করতে সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আসন হিসেবে পরিচিত বগুড়া-৬ (সদর) আসনে ফেয়ার নির্বচানের কৌশল নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। তার মতে এজন্য একাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বে প্রশাসন এবং পুলিশের আচরণেরও অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরতেই তিনি বুধবার সন্ধ্যার আগে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সাবেক সাংসদ বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ নির্বাচনে সরকারের ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, যদিও সারা বিশ্বে ইভিএম এখন বাতিল করা হচ্ছে কিন্তু তার পরেও নির্বাচন কমিশন থেকে বগুড়া-৬ আসনের নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সরকার সেই ইভিএমকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে। 
ইভিএমকে মানুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি যন্ত্র উল্লেখ করে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, এই মেশিনে ভোট নিতে ভোটারের লাইন লাগে না, ভোটার উপস্থিতির দরকার হয় না, কর্মী বাহিনীর প্রয়োজন হয় না এবং মারামারিও দরকার হয় না। তাই সরকার কৌশলে এই ইভিএম মেশিনকে জাষ্টিফাই করতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আসন হিসেবে পরিচিত বগুড়া-৬ (সদর) আসনকেই বেছে নিয়েছে।
আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচন ফেয়ার হবে-এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি কৌশলী দল। খালেদা জিয়ার আসনে ফেয়ার ভোট করে তারা ইভিএমকে জায়েজ করতে চায়। নির্বাচনের পর সরকার যাতে বলতে পারে খোদ খালেদা জিয়ার আসনে ইভিএম দিয়ে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে-এমন পরিকল্পনাই সরকারের রয়েছে।
গেল বছর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর প্রশাসন ও পুলিশের আচরণে পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, তিরিশে ডিসেম্বরের নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে প্রশাসন ও পুলিশের আচরণ ছিল যুদ্ধেংদেহী। কিন্তু এখন তাদের বডি ল্যাংগুয়েজসহ সার্বিক আচরণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। যা ইতিবাচক। যদিও কিছু কিছু স্থানে ধানের শীষের নির্বাচনী পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে এবং লিফলেট বিতরণের সময় হামলার মত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে কিন্তু তার পরেও আমরা বগুড়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকারের সদিচ্ছার একটা ছায়া দেখতে পাচ্ছি।
প্রশাসন ও পুলিশের আচরণের পরিবর্তন আগামী পাঁচ বছর অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন কি’না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। হয়তো সরকারের মধ্যে এক ধরনের বোধদয় তৈরি হয়েছে বলেই এসব পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। তাছাড়া অতীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চারপাশে যারা ছিলেন তারা এখন নেই। নতুন নেতৃত্ব এসেছে। এটাও একটা কারণ হতে পারে।’ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরীক জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন থেকে দূরে থাকার ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত নির্বাচনেও তারা ছিল না। তাদের ছাড়াই বিএনপি প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এই নির্বাচনে তারা যদি আসে তাহলে আমরা স্বাগত জানাবো। আর না এলে আমাদের কোন ক্ষতি হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির, বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, ফজুলল বারী তালুকদার বেলাল, সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন ও বিলুপ্ত যুবদলের জেলা কমিটির সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।