ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০১৯ ০৫:৩৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪৫ বার।

ভারতে সংখ্যালঘুরা এখনও হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে চলেছেন। দেশটিতে কোনো ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই।

গত বছর বহুবার উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছেন সংখ্যালঘু মুসলিমরা। শুক্রবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। খবর যুগান্তর অনলাইন

রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম-২০১৮ শীর্ষক প্রতিবেদনকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। রিপোর্টটি খারিজ করে দিয়ে রোববার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতে নাগরিকদের অবস্থা কেমন, তা নিয়ে বিদেশিদের বলার কোনো এখতিয়ার নেই।

এর আগে শনিবার এ প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ তকমা দেয় শাসক দল বিজেপি। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর প্রতিবেদনটি কংগ্রেসে পেশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৭ সালেও ভারতে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার অবনমনের ধারা অব্যাহত ছিল। ভারতের মতো একটি বহু ধর্ম ও বহু সংস্কৃতির দেশে ওই ঘটনা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে।

ধর্মের সঙ্গে জাতীয়তাবাদকে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। অ-হিন্দু ও হিন্দু দলিতদের বিরুদ্ধে হিংসা, হুমকি ও হেনস্তার ঘটনা বাড়িয়েছে হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী ও সংগঠনগুলো।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের সরকার অনেক সময়ই সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। গো-হত্যার নামে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করেছে। এর ফলে প্রাণহানি পর্যন্ত হয়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা আরও বেশি ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারতের ১০ রাজ্যে। এর মধ্যে রয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, ছত্তীশগড়, গুজরাট, ওড়িষ্যা, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থান।’

প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনের মধ্যে কোনো সত্যতা নেই।

পুরোটাই একটা ধারণার ওপর নির্ভর করে তৈরি। তিনি বলেন, ‘ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এই দেশ তার ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য গর্ববোধ করে।

ভারতের মতো একটি সজীব গণতান্ত্রিক দেশে সংখ্যালঘুসহ প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলো সংবিধানই সুরক্ষিত রেখেছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার মানুষের সেই স্বাধীনতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। সেই অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে কিনা, কোনো বিদেশি বা অন্য দেশের সরকারের তার ওপর নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি না।’

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারও এই রিপোর্টের বিরোধিতা করে তাকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছে। শনিবার বিজেপি এমপি ও মিডিয়াপ্রধান অনিল বালুনি একটি বিবৃতিতে বলেন, ই-রিপোর্টের প্রধান বিষয় হিসেবে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পনামাফিক অত্যাচার করা হয়েছে গত এক বছরে।

এটা সম্পূর্ণ ভুল এবং মিথ্যা। গত এক বছরে যেসব সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো সবই ব্যক্তিগত ও স্থানীয় গণ্ডগোল। এর সঙ্গে কোনোভাবেই ধর্ম যুক্ত নয়।’ অনিল আরও বলেন, ‘ভারতের সংবিধানই তো ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে।

আমাদের সরকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ম্লোগান হল- সবকা সাথ সবকা বিকাশ। দুঃখজনকভাবে এসব বিষয় রিপোর্টে কোনো জায়গা পায়নি।’