ঢাবির পরীক্ষায় ব্র্যান্ডের ৭ দুধই মানহীন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০১৯ ১৫:১৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৯ বার।

বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া প্রাণ, মিল্ক ভিটা, আড়ং, ইগলুসহ নামিদামি ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত সাতটি দুধই মানহীন। এসবের কোনোটিতে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্মের উপস্থিতি, কোনোটিতে অ্যান্টিবায়োটিক। এই তালিকায় আরও আছে বাজারে সর্বাধিক বিক্রিত ঘি, ফ্রুট ড্রিংক, গুঁড়া মসলা, ভোজ্যতেলসহ ৮ রকমের পণ্য। যেগুলোর প্রতিটিতে রয়েছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক উপাদান। খবর সমকাল অনলাইন 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি অনুষদ এবং বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের নমুনা পরীক্ষায় এমনই চিত্র উঠে এসেছে। অনুষদের কয়েকজন শিক্ষক সম্প্রতি বাজারে বেশি বিক্রি হওয়া কিছু খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোর গুণগত মান পরীক্ষা করেন। মঙ্গলবার ওই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার কোনোটিতেই কাঙ্ক্ষিত মাত্রার 'সলিড নট ফ্যাট' পাওয়া যায়নি। এই সাতটি নমুনার মধ্যে ছিল মিল্ক ভিটা, আড়ং, প্রাণ, ফার্ম ফ্রেস, ইগলু, ইগলু চকোলেট ও ইগলু ম্যাংগো। বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী দুধে 'ফ্যাট ইন মিল্ক' ৩ দশমিক ৫ শতাংশ থাকার কথা থাকলেও তা আছে ৩ দশমিক ৬ থেকে ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ পর্যন্ত।

এতে বলা হয়, সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি। পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার প্রায় সবগুলোতে মানব চিকিৎসায় ব্যবহূত লেভোফ্লপাসিন, এজিথ্রোমাইসিন এবং সিপ্রোফ্লপাসিন ইত্যাদি অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও এগুলোর সবগুলোতে ফরমালিন এবং তিনটি নমুনায় ডিটারজেন্টের উপস্থিতি ছিল।

মান পরীক্ষা করতে গিয়ে ফ্রুট ড্রিংকসের ১১টি নমুনার সবগুলোতে ক্ষতিকর সাইক্লামেট পেয়েছেন তারা। এগুলো হলো- স্টারশিপ ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংকস, সেজান ম্যাংগো ড্রিংক, প্রাণ ফ্রুটো, অরেনজি, প্রাণ জুনিয়র ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক, রিটল ফ্রুটিকা, সান ড্রপ, চাবা রেড এপল, সানভাইটাল নেক্টার ডি ম্যাংগো, লোটে সুইটেন্ড এপলন ড্রিংক, ট্রপিকানা টুইস্টার প্রভৃতি। এর মধ্যে তিনটিতে ছিল নিষিদ্ধ কলিফর্ম কাউন্টের উপস্থিতি এবং সাতটিতে মাত্রাতিরিক্ত টোটাল প্লেট কাউন্ট।

এদিকে আরকো, বিডি, ড্যানিশ, ফ্রেস, প্রাণ, রাঁধুনী এবং প্লাস্টিকের ব্যাগে খোলা বিক্রি হওয়া শুকনা মরিচ ও হলুদের মধ্যে বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ডের অতিরিক্ত জলীয় পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। হলুদে ছিল 'মেটানিল ইয়েলো' নামের কাপড়ের রঙ, যা বিশ্বের কোথাও গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া আড়ং, বাঘাবাড়ি, প্রাণ, মিল্ক ভিটা, মিল্কম্যান, সুমির ও টিনে বিক্রি হওয়া ঘি মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে। রূপচাঁদা, পুষ্টি, সুরেশ, ড্যানিশ ও বসুধা সরিষার তেলসহ বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ভোজ্যতেলের মানহীনতার চিত্রও উঠে আসে এই প্রতিবেদনে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মান পরীক্ষায় মিজান ও টিনে খোলা অবস্থায় বিক্রি হওয়া নামবিহীন ১০টি পাম অয়েলের নমুনার সবগুলোই মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া রূপচাঁদা, রাঁধুনী, তীর, ফ্রেশ, পুষ্টি, সুরেশ, ড্যানিশ, এসিআই, মুসকান ইত্যাদি ব্র্যান্ডের সরিষা এবং সয়াবিন তেলের আটটি করে নমুনার মধ্যে সকগুলোতেই স্যাপনিফিকেশন ভ্যালু, পারপাইড ভ্যালু ও রিলেটিভ ভ্যালু মাত্রাতিরিক্ত ছিল।