আমাদের মা জননী-২৯

মুসলিম নারীর কর্তব্য ও অধিকারের সীমারেখা

জুবাইর হাসান মোহাম্মদ জুলফিকার আলী
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০১৯ ১৭:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৩০ বার।

[গতকালের পর থেকে পড়তে হবে] 
আমরা গতকালের আলোচনায় বলেছিলাম হযরত আয়েশা রা:-এর রণাঙ্গনে ও রাজনীতিতে উপস্থিতি সম্পর্কে। তাঁর সেই ইতিহাস থেকে মুসলিম নারীর কর্তব্য ও অধিকারের সীমারেখা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। সেই ধারণা মোতাবেক বল যায়-
মুসলিম নারীর কর্তব্য ও অধিকারের সীমারেখা এমন সংকীর্ণ নয় যে, “যখন দেশ-জাতি আক্রান্ত হয়ে  অস্তিত্বহীন বিপন্নপ্রায় হওয়ার উপক্রম হয়, আর তখন কোনো একজন মুসলিম নারী, যিনি যোগ্য ও যাকে ছাড়া গতি নাই, তিনি কোনো ক্রমেই জনগণকে পথ দেখাতে পারবেন না কিংবা মুসলিম যোদ্ধাদের নির্দেশনা দিতে পারবেন না।” আসলে কোনো যোগ্যতম নারী যদি মনে করেন, তিনিই এই বিপদ থেকে জনগণকে উদ্ধার করতে পারবেন, তবে তিনিই জনপ্রতিনিধিত্ব গ্রহণ করবেন। ইমাম মালেক রহ: (মৃুত্য: ১৭৯ হিজরি), ইমাম তাবারি রহ: (মৃত্যু: ৩১০ হিজরি), ইমাম আবু হানিফা (মৃত্যু: ১৫০ হিজরি) সহ কতিপয় ইমামের দৃষ্টিতে প্রয়োজনে নারী ও জনপ্রতিনিধি ও বিচারক হতে পারেন।১ হযরত উমর রা: তাঁর শাসনামলে বাজার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ন্যস্ত করেছিলেন একজন নারীর ওপর, যার নাম ছিলো শিফা আবাদিয়া।২ শুধু তাই নয়; স্বয়ং হযরত আয়েশা (রা:)ও যখন নারীদের মজলিশে থাকতেন এবং নামাজের সময় হয়ে যেতো, তখন তিনি মধ্যখানে দাড়িয়ে যেতেন ঈমাম হিসাবে।৩
যাহোক, মুসলিম নারীর কর্তব্য ও অধিকারের সীমারেখা হাদিসে বর্ণিত একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করে শেষ করবো। তা হলো নবী সা: এর যুগে একজন সাহাবি রা: তাঁর মতামত যাচাই না করেই তাকে এক জায়গায় বিয়ে দিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় মেয়েটি নবী সা: এর শরণাপন্ন হলেন। রাসূল সা: তার পিতাকে ডাকেন এবং বিবাহ ভেঙ্গে দেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর তখন মেয়েটি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সা:! এখন আর এই বিবাহে আমার কোনো আপত্তি নেই। আমার এমন অভিযোগ করার উদ্দেশ্য ছিল মেয়েদের ব্যক্তিগত অধিকারের বিষয়টি যেনো স্পষ্ট হয়ে যায়।৪
[তথ্য সূত্র: ১. ফাতহুল বারী- ইবনে হাজার আসকালানী (মৃত্যু: ৮৫২ হিজরি), কাসতালানি (মৃত্যু: ৯২৩ হিজরি। ২. আসমাউর রেজালে শিফা আবাদিয়ার জীবনী; উদ্ধৃত: সীরাতে আয়েশা, পৃষ্ঠা-১৮৬। ৩. তাবাকাতে ইবনে সাদ, পৃষ্ঠা-৩৬০, কিতাবুল উম্ম: ঈমাম শাফেয়ী রহ: (মৃত্যু: ২০৪ হিজরি) প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা-১৪৫; উদ্ধৃত: সীরাতে আয়েশা-পৃষ্ঠা: ১৮৬। ৪. সুনানে নাসায়ী-ইমাম নাসায়ী রহ: (মৃত্যু: ৩০৩ হিজরি), সুনানে দারাকুতনী ইমাম দারকুতনী রহ: (মৃত্যু: ৩৮৫ হিজরি), মুসনাদে আহমদ-ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ: (মৃত্যু: ২৪১ হিজরি); উদ্ধৃত: সীরাতে আয়েশা (রা:), পৃষ্ঠা-১৮৪।] [পরবর্তী অংশ আগামীকাল]