মা মারা গেলেন ডেঙ্গুতে, হাসপাতালে মেয়ে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অগাস্ট ২০১৯ ১৩:৩৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১০৬ বার।

একই সঙ্গে মা ও মেয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মেয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য মা নাদিরা বেগমকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

শুক্রবার রাতে এ ঘটনার পর এ নিয়ে মাদারীপুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন চারজন। এছাড়া এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মাদারীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৮ রোগী।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এসব রোগীদের মধ্যে ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন মাদারীপুর থেকে। বাকিরা ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে মাদারীপুরে এসেছেন। এখনও সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি আছেন ১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত গৃহবধূ নাদিরা বেগম (৪০)  ও তার মেয়ে খাদিজা আক্তারকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা ৩০ জুলাই। কিন্তু শুক্রবার রাতে নাদিরার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে মাদারীপুর নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।

মারা যাওয়া নাদিরা ও তার মেয়ে খাদিজা চারদিন আগে ঢাকা থেকে ডেঙ্গু ভাইরাস নিয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে যান। সেখানে আসন না থাকায় ভর্তি না হয়ে ফিরে আসেন। নাদিরা কালকিনি উপজেলার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামের আলমগীর মোড়লের স্ত্রী।

এছাড়া মাদারীপুর জেলায় এ পর্যন্ত ৪৮ জনকে জেঙ্গু রোগী হিসাবে শনাক্ত করেছেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে বেশিরভাগ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও ফরিদপুর পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ৯, শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন ও কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে চিকিৎসাধীন আছেন।

মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার রুবেল হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তার (২২), বুধবার রাতে ঢাকার ইসলামিয়া ব্যাংক হাসপাতালে মারা যান শিবচরের সলুবেপারীরর কান্দি এলাকার বাবু খানের ছেলে ফারুক খান (২২) ও তার আগের দিন মঙ্গলবার কালকিনি উপজেলার পৌরসভার ঠেঙ্গামারা গ্রামের বারেক বেপারীর ছেলে জুলহাস বেপারী (৪৫) ঢাকায় মারা গেছেন। এনিয়ে মাদারীপুর জেলার চার বাসিন্দা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'নাদিরাসহ জেলায় চারজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মাদারীপুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী ঢাকা বা অন্য জায়গা থেকে ডেঙ্গুর জীবানু বহন করে এনেছেন। ২০ জন জেলার বিভিন্ন এলাকায় থেকে আক্রান্ত হয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসকদের ডেঙ্গুর ব্যাপারে আলাদা মনিটরিং করতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণে সরকারিভাবে ১২০টি কিট আছে, যার মধ্যে ৬০টি রাখা হয়েছে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে, বাকিগুলো অন্য সরকারি হাসপাতালে দেয়া হয়েছে।’