বগুড়ায় অবৈধ ২০টি ক্লিনিকের তালিকা প্রকাশ করলো জেলা প্রশাসন

পুণ্ড্রকথা রিপোর্টঃ
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০১৮ ১৯:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৮১০ বার।

বগুড়ায় লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ২০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের তালিকা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। ‘জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বগুড়া’ নামে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রোববার বিকেল ৬টায় ওই তালিকা প্রকাশ করে জনগণকে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, ‘বগুড়া স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে নিম্নে বর্ণিত হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারসমূহ লাইসেন্সবিহীন এবং সম্পূর্ণ অবৈধ। এ সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বগুড়া জেলা প্রশাসন কর্তৃক মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ সকল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।  অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের তালিকা প্রকাশের আগে এধরনের ৩টি ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়। তবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তালাবদ্ধ থাকায় অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।

লাইসেন্সবিহীন অবৈধ  ক্লিনিক এবং ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে বলা হয়েছে, ওই তালিকার বাইরেও যদি লাইসেন্সবিহীন অবৈধ হাসপাতাল বা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে তা কমেন্ট বক্সে উল্লেখ করুন। ফেসবুক ওয়ালে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ২০টি প্রতিষ্ঠানের নামের একটি তালিকার ছবিও তুলে দেওয়া হয়েছে। বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যমতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিকেরর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।  
শহরের শেরপুর রোডে ‘ডলফিন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক’ নামে বেসরকারি একটি হাসপাতালে গত ১৮ জুলাই রাতে অ্যাপেনডিসআইটিস অপারেশন করাতে গিয়ে সাকিব হাসান (১৪) নামে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়। সে ফয়জুল্বা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সাবিকের বাবা আব্দুল আজিজ লিটনের অভিযোগ, চিকিৎসক নামধারী ব্যক্তিদের ভুল চিকিৎসায় তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর পরই প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসক, নার্সসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী পালিয়ে যান। শহরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। প্রশাসনেরও টনক নড়ে।
পরদিন ১৯ জুলাই সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয় ক্লিনিকটির কোন লাইসেন্স নেই। এর পরপরই ভ্রাম্যামাণ আদালত সেই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে সেটি সিলগালা করে দেয়। তবে অভিযানের আগেই ক্লিনিকের চিকিৎসকসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী পালিয়ে যায়। ঘটনাটি তদন্তের জন্য ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল ওয়াদুদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। একইদিন রাতে নিহত স্কুল ছাত্র সাবিকের বাবা বাদী হয়ে সেই বেসরকারি হাসপাতালের ৪ চিকিৎসক এবং মালিকসহ ৮জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে পাঁচ আসামীর নাম লেখা হলেও অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও ৩জনের কথা বলা হয়েছে। এজাহারে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন:অভিযুক্ত চিকিৎসক এ. কে পাল, অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক সাদেকুর রহমান, তার সহযোগী চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন মামুন, ওসমান গণি ও ক্লিনিক মালিক জন ম-ল ওরফে জনি। তবে ২৯ জুলাই দিবাগত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামীকের কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।যে ২০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো হলো: (১) বন্ধু ডায়গনোস্টিক, গোহাইল রোড, খান্দার বগুড়া। (২) বিমট কমিউনিটি হাসপাতাল ও ডায়গনোস্টিক সেন্টার, গোহাইল রোড খান্দার, মাহবুব নগর বগুড়া। (৩) সোনার দেশ ক্লিনিক অ্যা- ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, পিটিআই মোড়, তেতুলতলা মোড়। (৪) অলকা নার্সিং হোম অ্যা- অনকোলজি সেন্টার, স্টাফ কোয়ার্টার ঠনঠনিয়া বগুড়া। (৫) বন্ধন হসপিটাল, শেরপুর রোড, কানুচগাড়ি বগুড়া। (৬) হ্যাপি নূর ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনোস্টি, পিটিআই মোড়, বগুড়া। (৭) আরহাম ডায়গনোস্টিক অ্যা- ক্লিনিক, হাফিজার রহমান সড়ক, রহমাননগর বগুড়া। (৮) নিউ পল্লী কিøনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, শহীদ খোকন সড়ক, জলেশ্বরীতলা বগুড়া। (৯) ইসলাম ক্লিনিক অ্যা- ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, শহীদ খোকন সড়ক,জলেশ্বরীতলা বগুড়া। (১০) সুলতানা ক্লিনিক, ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড ঈদগাহ্্ মাঠ সংলগ্ন বগুড়া। (১১) সাদমান ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, শেরপুর রোড কলোনী, বগুড়া। (১২) স্পেশালাইজড বগুড়া হাসপাতাল, ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড শেরপুর রোড, বগুড়া। (১৩) বগুড়া ন্যাশনাল হসপিটাল, ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড শেরপুর রোড, বগুড়া। (১৪) ফাতেমা কিডনি ডায়ালাইসিস অ্যান্ড ট্রমা সেন্টার, ঠনঠনিয়া বাস স্ট্যান্ড, বগুড়া। (১৫) গ্রীণ লাইফ ক্লিনিক, ময়েজ মিয়ার বাগানবাড়ি, শেরপুর রোড, কানুচগাড়ি বগুড়া। (১৬) তেসলা নিউরোসায়েন্স ও জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনোস্টিক সেন্টার, ময়েজ মিয়ার বাগানবাড়ি, শেরপুর রোড, বগুড়া। (১৭) মেরীপ্লাস ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, নূর মসজিদ লেন, জলেশ্বরীতলা, বগুড়া। (১৮) টিউলিপ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক, বনমালী দেব লেন, জলেশ্বরীতলা, বগুড়া। (১৯) ডলফিন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগোনস্টিক, শেরপুর রোড,সাতানি বাড়ি বগুড়া। (২০) মা বাবা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক, বেলাইল বিশ্বরোড, বগুড়া।